
দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে বর্ষার কারণে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া গতির যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঈদের পর অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানোর ফলে। বিশেষ করে খাদে পড়ে যাওয়া বা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লাগার মতো দুর্ঘটনাই বেশি ঘটেছে।
এবছরের ঈদুল আজহা’র যাত্রায় ১৫ দিনে সারা দেশে সড়কে ৩৭৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৩৯০ জন, আহত হয়েছেন ১১৮২ জন। একই সময়ে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সবমিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৪১৫টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত এবং ১১৯৪ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো.মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি আরো বলেন,২০২৪ সালের ঈদুল আজহার তুলনায় এবার সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, নিহতের সংখ্যা ১৬ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা ৫৫ দশমিক ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো.মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২০ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে। এ ছাড়া, ঢাকা মহানগরে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম মহানগরে ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং রেলক্রসিংয়ে ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
মো.মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন ‘সড়কে দুর্ঘটনা ও মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে ঈদের আগে অন্তত চার দিনের সরকারি ছুটি প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি যাতায়াত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা। গণপরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, ছোট যানবাহন মহাসড়ক থেকে সরাতে হবে, দক্ষ চালক তৈরি করতে হবে এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল রোধ করতে হবে। একই সঙ্গে মানসম্মত সড়ক ও আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।’
এসময় যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে বৃষ্টির কারণে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া গতির যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঈদের পর অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানোর ফলে। বিশেষ করে খাদে পড়ে যাওয়া বা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লাগার মতো দুর্ঘটনাই বেশি ঘটেছে।
বিশেষ করে সংগঠনটির এ প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, এবারের ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য এবং পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে পৌঁছায়। গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেক দরিদ্র মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদ, ট্রেনের ছাদ, খোলা ট্রাক বা পণ্যবাহী যানবাহনে করে বাড়ি যেতে বাধ্য হয়েছেন।