ছাত্রলীগের ক্ষমতাকে পেশী শক্তি করে দীর্ঘ এক বছর যাবত নিরীহ এক পরিবারকে দিনের পর দিন অত্যচার করে পার পেয়ে যাচ্ছে শেরপুর জেলা, নকলা উপজেলার, ৫নং বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের অন্তর্গত ৮নং ওয়ার্ডের (কায়দা পশ্চিম মুছারচর) ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম রাসেল।
ভুক্তভোগী রিনা বেগমের ভাষ্য মতে, গত এক বছর আগে আমার ছেলে মোঃ রনি পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে পালিয়ে বিয়ে করে। পালিয়ে বিয়ে করাই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায় আমার পুরো পরিবারের জন্য। এই বিয়ের জের ধরে, দীর্ঘ এক বছর যাবত আমরা ঘরছাড়া। তিনি আরো বলেন, রাইসুল ইসলাম রাসেল সম্পর্কে আমার দেবর, আমাদের বসতঘর পাশাপাশি। ভাতিজার পালিয়ে বিয়ে করাকে কেন্দ্র করে, আমাদের উপর চড়াও হয় এবং আমাদের পুরো পরিবারকে বাড়ি ছাড়া করে দেয়।
দীর্ঘ এক বছর বাবার বাড়ি ছিলাম ,গত ০৮.০৩.২৪ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার নিজ বসতবাড়িতে চলে আসি। এসে দেখি আমাদের ঘরে তালা ঝুলানো, যখন তালা খুলতে যায় তখন ঘটনাস্থলে আসিয়া রাইসুল ইসলাম রাসেল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে, আমি তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে, আমার তলপেটে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে কিল, ঘুষি মারতে থাকে, এক পর্যায়ে তার দুই ভাই নবী হোসেন ও সুমন মিয়া বাঁশের লাঠি এবং কাঠের শারকের সাহায্যে এলোপাথাড়ি মাড়তে থাকে, উপায়ান্ত না পেয়ে ডাক চিৎকার শুরু করি। আমার ডাক চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং রক্ষা করেন। পরমুহূর্তে আমার অবস্থা শোচনীয় দেখে আমার ভাই রুবেল মিয়া আসেপাশের লোকজনের সহায়তায় অপরিচিত এক ব্যটারিচালিত অটো রিকশার যোগে সুচিকিৎসার জন্য নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে ভর্তি করেন।
কথা বলার এক পর্যায়ে, হাসপাতাল বেডে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে রিনা বেগম বলেন, বাবা আমার কেউ নেই। ওদের বলে মেলা ক্ষমতা, আমারে মাইরা ঘুম করে ফেলবার চায়।আমি, আমার পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা অবস্থায় বাদী হয়ে মোঃ রাইসুল ইসলাম রাসেল, মোঃ নবী হোসেন ও মোঃ সুমন মিয়াকে আসামি করে নকলা থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
উপরোক্ত বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে ব্যার্থ হয়। পরবর্তীতে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ রমজান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা তাদের পারিবারিক ব্যাপার। এই বিষয়টা মিমাংসা করার লক্ষ্যে আমি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ বেশ কয়েকবার সালিশ করেছি কিন্তু কোন সুরাহা করতে পারি নি। শুনেছি ভুক্তভোগী রিনা বেগম মামলা করেছে, এখন আইনের মাধ্যমে যা ফয়সালা হয়।