২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা কর্তৃক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সময় টেলিভিশনের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম হিরা ও চিত্র সাংবাদিক বাবু চক্রবর্তীকে পেশাগত কাজে বাঁধা দিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শেরপুর প্রেস ক্লাবের আয়োজনে আজ ২১ (নভেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপি কর্মবিরতিতে জেলার সকল সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। এসময় বক্তব্য রাখনে শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর নকলা উপজেলা শাখার সভাপতি শফিউজ্জামান রানা সহ অনেকে। প্রতিবাদ কর্মসূচী শেষে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সেলিম মিঞাকে অপসারণের দাবীতে সিভিল সার্জন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শেরপুর প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।
আগামী তিনদিনের মধ্যে ডাঃ সেলিম মিঞাকে শেরপুর জেলা হাসপাতাল থেকে প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি কর্মসূচী থেকে। অন্যথায় শেরপুর জেলাসহ ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিকদের নিয়ে জেলায় জেলায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা। শুধু তাই নয়, সারা দেশে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতের সকল ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে অন্যায়কারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী করা হয়।
বক্তব্য কালে সাংবাদিকরা বলেন, নানা অনিয়মের অভিযুক্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সেলিম মিঞাকে অপসারণ না করে, স্টোর কিপার রফিক ও উচ্চমান সহকারী মাহমুদুন্নবী সজলকে বদলী করে স্বাস্থ্য বিভাগ ‘ঝি মেরে বউকে শাসন’ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী, জুলাই বিপ্লবের বিরোধীতাকারী, স্বাচিপ নেতা ডাঃ সেলিমের মত সন্ত্রাসীকে শেরপুরের স্বাস্থ্য বিভাগে দেখতে চাইনা।
উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর দুপুরে জেলা হাসপাতালে ওষুধ ক্রয়ে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে যান সময় টেলিভিশনের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম হিরা ও চিত্র সাংবাদিক বাবু চক্রবর্তী। এসময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সেলিম মিঞার কাছে চলতি বছরের হাসপাতালের ঔষধ ও মালামাল ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান ওই সাংবাদিক। এক পর্যায়ে ডাঃ সেলিম মিঞা ওই সাংবাদিককে খবর প্রচার করতে নিষেধ করেন। খবর প্রচার করলে দেখে নেয়ারও হুমকীও দেন তিনি। পরে ওই ছবি ধারণ করতে গেলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে সময় টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিকের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন এবং জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলামকে শার্টের কলার ধরে হেনস্থা করে তার কক্ষে প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে অন্য সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে কৌশলে পালিয়ে যান হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডাঃ সেলিম মিয়া।