নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ায় অফিসে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর তথ্যে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির আহমেদ চৌধুরী ও সিনিয়র শিক্ষক হারুন অর রশিদদের বিরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানিসহ নানান অভিযোগ উঠে। তাদের বদলির দাবিতে ২৫ আগস্ট লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
বিশৃঙ্খলা ও শ্লীলতাহানি এড়াতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের মৌখিক নির্দেশনা দেয় মেসেজিং কমিটি। প্রধান শিক্ষক নির্দেশনা মেনে চললেও সিনিয়র শিক্ষক হারুন অর রশিদ তা অমান্য করে প্রায়ই স্কুলে ঢুকে পড়তেন। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সহকারী শিক্ষকের স্কুলে ঢুকার বিষয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রোববার জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করেন।
এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হন। পরে তারা সহকারী প্রধান শিক্ষককে অফিস কক্ষে তালা বদ্ধ করে রাখে প্রায় দুই ঘণ্টা। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে তাকে মুক্ত করে।
দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিদ্যালয়ে আসতে বারণ করেন ইউএনও। কিন্তু হারুন সাহেব নির্দেশনা অমান্য করে বিদ্যালয়ে আসতেন। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে যায়। অন্যদিন ছাত্রদের থামাতে পারলেও আজকে আমাদেরসহ কক্ষে আটকে রাখে ছাত্ররা। পরে আমাদের চারজন শিক্ষককে বের হতে দিলেও হারুন সাহেবকে প্রায় দুঘণ্টা আটকে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে মদন সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছেন।
এযন ঘটনায় ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার জানান, অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুজনকে বিদ্যালয়ে কয়েকদিন না আসাতে বলেছিলাম। এরপরেও হারুন সাহেব প্রায় সময় বিদ্যালয়ে যেতেন এবং নানান কথা ছড়াতেন। এ নিয়ে ছাত্ররা উত্তেজিত ছিল। বৃহস্পতিবার স্কুলে গেলে তাকে অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করেছেন।