ফেনীর সোনাগাজীতে আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় বাতিল করে পুন:তদন্ত করতে অন্তর্বতি কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ও আইন উপদেষ্ঠার হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দন্ডিত কলেজ ছাত্র সাইফুর রহমান জোবায়ের এর পিতা আবুল বশর।
রবিবার (০১সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্থানীয় একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন,নুসরাত জাহান রাফির আত্মহত্যার ঘটনা কে তৎকালিন আওয়ামী প্রশাসন কর্তৃক ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে হত্যাকান্ড সাজিয়ে আমার সন্তান মেধাবী ছাত্র সাইফুর রহমান জোবায়ের সহ ১৬ জনের মৃত্যদন্ডের যে রায় দেয়া হয়েছিল তা বাতিল সহ প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে এবং বিচার বিভাগীয় পুন:তদন্তের জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্ঠা ও আইন উপদেষ্ঠা মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি,আশাকরি আপনাদের গণমাধ্যমের সহযোগিতায় আমার এই বক্তব্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্ঠা,আইন উপদেষ্ঠা সহ সরকারের সংম্লিষ্ট সবার নজরে আসবে।
তিনি আরো বলেন,গত ২০১৯ সালের ০৬ এপ্রিল তারিখে আলিম পরীক্ষা শুরুর মাত্র ১০মিনিট আগে মাদ্রাসা ভবনের ছাদ থেকে শরীরে আগুন সহ দৌঁড়ে নিছে নামে নুসরাত, পাবলিক পরীক্ষার নিরাপত্তার জন্য সরকারি বিধি মোতাবেক তখন মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি ছিল,দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ, শিক্ষক ও পরীক্ষার্থী গণ ব্যাতিত মাদ্রাসার ভিতরে আর কারো থাকার সুযোগ ছিলোনা, মাদ্রাসার একমাত্র প্রবেশ পথে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিলো তখন বহিরাগত কারো ভেতরে প্রবেশের সুযোগ ছিলনা।
চিকিৎরত অবস্থায় ১০এপ্রিল তারিখে নুসরাতের মৃত্যু হলে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুফের দ্বন্ধের কারনে একপক্ষ এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য চেষ্টা তদবীর করে এবং নুসরাতের পরিবার ও তদন্ত সংস্থা পিবিআই কে টাকা দিয়ে প্রভাবিত করে,আমার ছেলে সহ অপরাপর আসামিদের রিমান্ডে এনে বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করে পিবিআই,পরে সাজানো স্বাক্ষীদের আদালতে এনে মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদান করতে বাধ্য করলে ও এই ঘটনায় কোন স্বাক্ষী নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শি দাবি করেনি,মামলা প্রমানের পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত না থাকলেও মিডিয়া ট্রায়াল কে গুরুত্ব দিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর মৃত্যুদন্ড ঘোষনা করে বিচারিক আদালত।
আওয়ামীলীগ সরকারের সীমাহীন অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতার গণবিপ্লবের ফল হিসাবে বর্তমানে জনগনের আশা আকাঙ্খার সরকার দায়িত্ব নিয়েছে,আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্ঠা ও আইন উপদেষ্ঠা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই,আপনারা যদি কোন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খবর নেন তবে জানতে পারবেন একটা আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যাকান্ড সাজাতে কতটা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলো তদন্ত সংস্থা পিবিআই কতটা নির্লজ্জ সহযোগিতা করেছিলো তৎকালিন স্থানীয় আওয়ীমীলীগের একাংশ।
বর্তমান সরকার যখন পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের সকল দূর্নীতি ও বেআইনী কর্মকান্ড তদন্ত করছে তখন এক অসহায় বাবা হয়ে আকুতি জানাচ্ছি নুসরাতের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জাতিকে জানাতে এবং আওয়ামী প্রশাসনের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের ফিরিস্তি উদঘাটন করতে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্ঠা ও আইন উপদেষ্ঠা মহোদয় আশা করি ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে নুসরাতের মৃত্যুর প্রকৃত কারন উদঘাটনে আমাদের আকুতি আমলে নিবেন।
