জামালপুরের মাদারগঞ্জে মাদরাসা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া ও বেতন-ভাতা বন্ধের হুমকির অভিযোগ আনিছুর রহমান ফাসুদ বিরুদ্ধে।
আনিছুর রহমানের বাড়ি মাদারগঞ্জ উপজেলার ছোট ভাংবাড়ী গ্রামে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বিশস্ত সহযোগী। মির্জা আজমের কল্যাণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের পদ ভাগিয়ে নিয়ে নেন। তার গ্রামের বাড়িতে ছিলো ত্রাশের রাজত্ত। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরও রাজত্ত ধরে রাখতে বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে।
মির্জা আজমের কল্যাণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের পদ ছাড়াও মাদারগঞ্জ উপজেলার মিলন বাজার ভাংবাড়ী আলিম মাদরাসার ০২-১২-২০১৯ইং সাল থেকে ৩০-১২-২০২১ইং সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সভাপতি থাকা কালে করেছেন একাধিক নিয়োগ বাণিজ্য। নিয়োগ বাণিজ্যের সময় অধ্যক্ষ কিছু বলতে গেলে মাদরাসার অধ্যক্ষকে কোনঠাসা করে রাখতো।
এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আনিছুর রহমান ফাসুদ সভাপতি থাকা কালিন সময়ে অফিস সহকারি কাম হিসাব, নিম্নমান সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর, গ্রন্হাগারিক এই তিনটি পদের প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন। অধ্যক্ষ উপজেলা জামায়তে ইসলামির আমির থাকায় কোনঠাসা করে রাখতো। যেকোনো কাজে তাকে জিম্মি করে রাখা হতো। এমনকি মাদরাসার কোনো কাজের জন্য মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং মাদারাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে যেতে দেওয়া হতো না এমন অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ মোঃ আঃ ওয়াহেদ।
খোঁজ খবর নিয়ে আরও জানা যায়,সভাপতি থাকা কালিন সময়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য পরিদর্শক বাদশা মিয়ার সাথে যোগসাজশ করে এই নিয়োগ গুলো সম্পূর্ন করেন। সে সময় অধ্যক্ষ মো. আঃ ওয়াহেদ নিয়োগ বাণিজ্যে বাধা দিলে এবং স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে তাকে মিলন বাজার আওয়ামীলীগ অফিসে কয়েক ঘন্টা আটকে রেখে নিয়োগের কাগজপত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয় এবং সে সময় তার কাছ থেকে সাদা স্টেম্পে স্বাক্ষর ও সাদা চেকের পাতায় স্বাক্ষর নেয়। আর এই সবকিছুর নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন সভাপতি আনিছুর রহমান ফাসুদ। সে সময় তার ভাড়াটে লোকজন দিয়ে অধ্যক্ষের সুনাম নষ্ট করতে মানববন্ধন করিয়েছিলেন।
সেই মানববন্ধনের প্রতিবাদে এলাকাবাসী শিক্ষক কর্মচারী ও মাদারাসার সকল শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধন করেন। এছাড়াও ২০১৭ সালে মাদারগঞ্জ উপজেলার জামাতের আমির থাকা অবস্থায় সাবেক সংসদ মির্জা আজম এর নির্দেশে মিথ্যা মামলায় ৫৮ দিন হাজত খাটেন অধ্যক্ষ।
অভিযোগ রয়েছে আনিছুর রহমান এখনো বিভিন্ন মাদরাসার নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। প্রায় মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। সে শুধু মিলন বাজার ভাংবাড়ী আলিম মাদরাসা নয় একাধিক মাদরাসার নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। তার এই কাজে সহযোগিতা করেছেন অধিদপ্তরের পরিদর্শক বাদশা মিয়া। পরিদর্শক বাদশা মিয়ার সাথে ছিলো তার গভীর সম্পর্ক।
মিলন বাজার ভাংবাড়ী আলিম মাদরাসা অধ্যক্ষ মোঃ আঃ ওয়াহেদ বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমাকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছিল। কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
এ সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর রহমান ফাসুদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।