সারা বাংলাদেশের ন্যায় শেরপুর জেলাতেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা পিস্তল, শর্টগান এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর। সে সময়, শারদুল আশীষ সৌরভ (২২) ও মাহবুব আলম (২৫) নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। সেই ঘটনায় জরিত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই এমপি আতিউর রহমান আতিক ও ছানুয়ার হোসেন ছানুসহ ৮৭ জনের মানে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার নিহত শিক্ষার্থী সৌরভের বাবা ছোহরাব হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় এ মামলাটি করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম।
হত্যা মামলার বাকি আসামিরা হলেন- শেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান, শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম,সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ফাতেমাতুজ্জহরা শ্যামলী, শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ম্যাজিস্ট্রেট বহনকারী পিকআপ গাড়ির ড্রাইভার হারুন মিয়া,খড়মপুর মহল্লার আব্দুল আলিম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত,জেলা যুবলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, আওয়ামী লীগ নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য, জেলা জাসদের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওসি মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মামলায় ছানুয়ার হোসেন ছানু, হুমায়ুন কবির রুমান, আব্দুল আলিম পিস্তল ও শটগান দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে দা, লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিকসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শেরপুর শহরের খড়মপুর এলাকায় নতুন আইডিয়াল স্কুলের সামনের পাকা রাস্তায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে গুলি বর্ষণের একপর্যায়ে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করলে আন্দোলনকারীরা প্রাণ ভয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় নির্বাহী হাকিমকে বহনকারী একটি সাদা পিকআপ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যাওয়ার সময় নিচে চাপা পড়ে শারদুল আশীষ সৌরভ ও মাহবুব আলম নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শারদুল আশীষ সৌরভ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার জড়াকুড়া, পাইকুড়া গ্রামের ছোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি শেরপুর শহরের ডা. সেকান্দর আলী কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।