গত ৩ জুলাই (বুধবার) শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় নাকুগাঁও গ্রামে বসতবাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে একদল বন্যহাতি। গত বুধবার রাতে ৩০-৩৫টি বন্যহাতির একটি দল উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও গ্রামে তাণ্ডব চালিয়ে পাঁচটি পরিবারের বসতঘরসহ সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। একইসাথে খেয়ে সাবাড় করেছে এসব পরিবারের গোলায় থাকা ধান, ভেঙে চুরমার করেছে ঘরে থাকা আসবাবপত্র। এছাড়া পায়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করেছে আমনের বীজতলা।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই নাকুগাঁওসহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় বন্যহাতি অবস্থান করে ফসল নষ্ট করাসহ নানাভাবে তাণ্ডব চালিয়ে আসছিলো। বুধবার রাত ৯টার দিকে ৩০ থেকে ৩৫টি বন্যহাতির একটি দল আকস্মিক নাকুগাঁও গ্রামের ভারত সীমান্তঘেঁষা রঞ্জিত ঘোষ, সুমন রবিদাস, গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস, সিন্ধু ঢালু ও রূপেন ঢালুর বসতবাড়িতে একযোগে হানা দেয়।এসময় ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে এসব পরিবারের সদস্যরা ঘর ছেড়ে বের হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন করে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন এসে হৈ-হুল্লোড় করে, সার্চ লাইট জ্বালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ও নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে পে-লোডার নিয়ে শব্দ করে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালিয়ে আবারও পাহাড়ে ফিরে যায় বন্যহাতির দলটি।বন্য হাতির তাণ্ডবে এসব পরিবারের রান্না ঘর, গোয়াল ঘর ও বসতঘরসহ মোট ছয়টি ঘর ভেঙে গেছে। খেয়ে ও ছিটিয়ে সাবাড় করেছে গোলায় থাকা ধান ও চাল। ভেঙে চুরমার করেছে ঘরের আসবাবপত্র। বাড়ির টিউবওয়েল থেকে আমনের বীজতলা কিছুই রেহাই পায়নি। এমনকি হাতির আক্রমণে আহত হয় একটি গরু।উপরোক্ত ঘটনার খবর পেয়ে, আজ ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের সরকারের ঘোষিত ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দেন।ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে রঞ্জিত ঘোষের বাড়িতে রাত ৮.৩০ থেকে ৯টা পর্যন্ত বন্যহাতি হামলা চালায়। এসময় ঘরে থাকা দশ কাঠা জমির ধান, খোড়াকির চাল ও গরুর খাদ্য খেয়ে ফেলে হাতিগুলো। ঘরের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে। হাতির আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি গরু এমনকি রান্নাঘরও।এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ধান-চাল, আসবাবপত্র ও আমন বীজতলাসহ প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবং মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বীজতলা এবং ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করেছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।