স্বৈরাচার শাসনামলে গুম, খুনের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে।
‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হচ্ছে।
সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে গঠিত এই বাহিনীর বিলুপ্তি কেন চান তা ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর হাফিজ বলেন, এটা মেডিকেল বিদ্যাতেও আছে, যখন একেবারে গ্যাংরিন হয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তখন কেটে ফেলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এই মুহূর্তে র্যাবকে বিলুপ্ত করা হলে জনগণের কাছে একটা ভালো সিগন্যাল যাবে বলে মনে করেন হাফিজ।
প্রসঙ্গত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে।
জমা দেওয়া রিপোর্টে কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ১,৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেন বলে জানান।