দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সড়কে চলাচলকারী যানবাহন একটু ভুলে ডান-বামে গেলেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
মেহেরপুর জেলায় চলছে ২৮ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ। এর ফলে সড়কের দুই পাশে তিন থেকে চার ফুট পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে রেখেছে সড়ক উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঘন কুয়াশায় গর্ত দেখা না যাওয়ায় সেটি পরিণত হয়েছে মৃত্যুফাঁদে।
এ বিষয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কালু মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর শীত যেন পাইড়ি বসেছে। তারপর শুরু হয়েছে ঘন কুয়াশা।
‘সড়কে ১০ হাত দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। আমাদের সবসময় জীবন হাতে নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’
বাসচালক গোলাম মিয়া বলেন,‘আজ পাঁচ মাস ধরে সড়ক উন্নয়নকাজের জন্য কর্তৃপক্ষ সড়কের দুই পাশে খুঁড়ে রেখেছে। আবার কোথাও বালি দিয়ে ভরাট করে রেখেছে।
‘দুটি বাস পাশাপাশি যাওয়া যায় না। তার ওপরে ঘন কুয়াশায় সড়কে গাড়ি চালানো খুব ঝুঁকির হয়ে গেছে।’
স্কুল শিক্ষক মুনজুর আলী বলেন, ‘আজ থেকে সপ্তাহখানেক আগে আমার এক সহকর্মী বামন্দী বাসস্ট্যান্ডে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এমন সময় দুটি বাস পাশাপাশি হয়ে যাওয়ায় একটি বাস এসে তাকে ধাক্কা দেয়। বতর্মানে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
তেরাইল গ্রামের ব্যবসায়ী মিলন বলেন, ‘২০ থেকে ২৫ দিন আগে তেরাইল বাজারে আমাদের চোখের সামনে বাসের চাপায় একজন মারা গেল। লোকটার কোনো দোষ ছিল না। রাস্তার পাশে খোঁড়াখুঁড়ি থাকায় একটি বাস আরেকটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে লোকটাকে চাপা দিয়ে চলে গেল।’
সড়ক উন্নয়নকাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিমি এন্টারপ্রাইজের পক্ষে একজন বলেন, ‘সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ৯ মাস আগে। আমাদের শিডিউলে দেয়া নির্ধারিত সময়ের আগেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।’
মেহেরপুর বাস মালিক সমিতির সদস্য বাবলু বলেন, ‘সড়ক সংস্কারের জন্য আমাদের প্রতিটি গাড়ির অ্যারাইভাল টাইম এক ঘণ্টার জায়গায় ২০ মিনিট করে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কেননা সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কের আকার ছোট হয়ে গেছে। তার ওপরে ঘন কুয়াশা। আর বৃষ্টি হলে তো আরও বিপদ। সড়কে কাদাই স্লিপ করে।’
গত মাসে দূরপাল্লার চারটি বাস উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে গাংনী উপজেলাতেই। এতে আহতের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত।
এ অঞ্চলের আবহাওয়া নির্ণয়কারী চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, ‘আজ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সকাল ৯টায় মেহেরপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ৯৫ শতাংশ, যেখানে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ১৬.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
‘আগামীকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে পাঁচ তারিখ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকতে পারে। আগামী রোববার আবার তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। ৬ ফেব্রুয়ারি আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।