একের পর এক জয়, নতুন বাংলাদেশে যেন চারদিকে জয়ের সুবাতাস বইছে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট ক্রিকেট জয়, ফুটবলে যুবদের চ্যাম্পিয়ন।
নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নেপালের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাই কিছু শঙ্কা থাকলেও ফাইনালে মাঠে লড়াইয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে একক আধিপত্য বিস্তার ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
অধরা শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে মিরাজুল ইসলামের জোড়া গোলে আয়োজক নেপালকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধও নিল মিরাজুল-আসিফরা।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট ২০২৪) রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারি ছিল নেপালি সমর্থকে ভর্তি। তবে মাঠের পারফরম্যান্স আর কোচ মারুফল হকের কৌশলের কাছে পেরে ওঠেনি স্বাগতিকরা।
খেলার শুরুতেই সারা মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে লাল-সবুজ বাহিনী। মিরাজুল ইসলামের দুই এবং রাব্বি হোসেন ও পিয়াস আহমেদের একটি করে গোলে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এর আগ বয়সভিত্তিক সাফের সম্ভাব্য সবগুলো ট্রফি জেতা হলেও ধরা দিচ্ছিল না অনূর্ধ্ব-২০-এর শিরোপা। তবে এবার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন বাংলাদেশের যুবারা।
সাফের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ের পর নেপালের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এতে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে খেলে সেমিফাইনালে।
গত আসরে (২০২২ সালের) ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে শিরোপা বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। এবার তাদের টাইব্রেকে হারিয়ে শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নেয় মারুফুল হকে শিষ্যরা।
দুই দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। ৮ মিনিটে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশের গোলকিপার মোহাম্মদ আসিফ হোসেনকে। নিরাজন ধামীর দুরপাল্লার শট অনেকটা লাফিয়ে ওঠে কোনো মতে দলকে রক্ষা করেন তিনি।
কয়েক দফা আক্রমণ করে গোল আদায় করতে পারেনি নেপালিরা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের শেষ দিকে মিরাজুরের দৃষ্টিনন্দন ফ্রি-গোলে বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট।
বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড নম্বর টেনের বুলেট গতির শট আটকানো কোনো সুযোগ পাননি নেপালের গোলকিপার জয়রথ শিখ। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৫ মিনিটে গোল ব্যবধান দ্বিগুণ হয় বাংলাদেশের।
মাঠের বাঁদিক থেকে লং পাসে দূরের পোস্টে থাকা আসাদুল মোল্লাকে পাস দেন আসাদুল ইসলাম সাকিব। আসাদুল হেডে পাস দেন মিরাজুলকে। সেই হেড দিয়েই লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। এতে জেতেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। ৭০ মিনিটে তৃতীয় গোল পেলে জয় অনেকেটা নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। মিরাজুলের ছোট পাস ধরে দলতে ৩-০ গোলে এগিয়ে নেন রাব্বী হোসেন রাহুল।
তৃতীয় গোলের ১০ মিনিট পর নেপালের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন সমীর। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রাব্বীর আড়াআড়ি পাসে গোলপোস্টে শট নোভা। নেপালের ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করলেও, আগেই পেরিয়ে গোল গোললাইন। এতে ৪-১ গোলে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের শিরোপা জয়।