পিরোজপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শেরপুরের একই পরিবারের চারজনসহ আটজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ রঘুনাথপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে মোতালেব হোসেন (৩৮), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), মেয়ে মুক্তা (১২) ও ছেলে সোয়াইব (৪)। মোতালেব হোসেন সেনাবাহিনীর বেসামরিক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন।
দুর্ঘটনায় নিহত অন্যরা হলেন- পিরোজপুরের নাজিরপুরের হোগাবুনিয়া এলাকার মৃত আসাদ মৃধার ছেলে শাওন মৃধা (৩২), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (২৫) ও তাদের দুই ছেলে আবদুল্লাহ (৩) ও শাহাদাত (১০)।
পরিবারের মারফতে জানা গেছে, মোতালেব হোসেন ঢাকায় থাকতেন। দুদিন আগে বন্ধু শাওনকে নিয়ে দুই পরিবারের সদস্যরা কুয়াকাটা বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে পিরোজপুরের নাজিরপুর সড়কে নূরানি গেইট এলাকায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাদের বহন করা প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি খালে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় নিহত মোতালেবের পরিবারের সদস্যরা জানান, শাওন গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সে ভালো চালক ছিল। কী কারণে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারালো, সেটি তারা বলতে পারছেন না। তারা আরও জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুই পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মোতালেবের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে তার গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছেলে, তার স্ত্রী ও নাতি-নাতনীদের মৃত্যুর খবরে আহাজারি করছেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে মোতালেবের বাবা হতদরিদ্র নাজিম উদ্দিন জানান, আউট সোর্সিংয়ে সেনাবাহিনীতে চতুর্থ শ্রেণিতে চাকরি পান মোতালেব। ৩ বছর আগে চাকরি সরকারীকরণ হয়। বসতভিটা ছাড়া তাদের আর কিছু নেই। ছেলে প্রতি মাসে তাদের সংসার চালানোর জন্য টাকা পাঠাতেন। সেই টাকায় বৃদ্ধ বাবা-মা কোনো রকমে চলতেন। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেল।
দুর্ঘটনায় নিহতের বিষয়টি পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান ও শেরপুরের কামরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে গাড়িতে থাকা ৮ জনই নিহত হয়েছেন। আব্দুল মোতালেব নামে একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। সেখানে জানা যায়, তিনি শেরপুরের বাসিন্দা।