পরকিয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে চৌমুহনী পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার মাইল্যা বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে পিংকিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে খালেদ। একই সময়ে আসামি ভিকটিমের শ্বশুর রেজাউল হক (৮০) কে ও কুপিয়ে জখম করে। অভিযুক্ত দেবর সাইফুল ইসলাম ওরফে খালেদ (৩০) একই বাড়ির ডিশ লিটনের ছেলে। নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩০) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং ২ ছেলের জননী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর পরই আসামি খালেদ ফেনী থেকে বাস যোগে সরাসরি ঢাকা কাকরাইল জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামায়াতের সাথে যোগ দিয়ে নিজেকে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে ঢাকায় ৩ দিন তাবলিগ জামায়াত সম্পন্ন করে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার মৌলভীবাজার এলাকার নলুয়া জামে মসজিদে গিয়ে তাবলীগ জামায়াতে যোগদান করে। বেগমগঞ্জ মডেল থানার আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান নির্ণয় করে। পরে গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) নলুয়া জামে মসজিদে তাবলীগ জামায়াত শেষ পর্যায়ে অপর মসজিদে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ডিসেম্বর) দুপুরে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। খালেদ পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাতো দেবর হয় এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার বড় ছেলের মাধ্যমে সেটি বাজার থেকে ঠিক করে আনতে দেয় খালেদকে। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেইল করে সাত লাখ টাকা আদায় করে। একই কায়দায় পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালায়। এরপর সে আরও টাকা দাবি করে এবং পরকীয়ায় ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।