পবিত্র শুক্রবার, গরিবের হজ্ব সমতুল্য জুমআ’র নামাজের খুতবা চলাকালীন সময়ে দানবাক্স কিংবা কোন লোক মারফত টাকা উঠানো যাবে না। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এ সময় টাকা উঠানো কিংবা দানবাক্স চালিয়ে দেয়া নাজায়েজ তথা নিষেধ।শুক্রবারে জুমআর নামায চলাকালে ইমামের খুতবা শোনাকে ওয়াজিব করা হয়েছে। শুধু খুতবা শোনা নয়, খুতবা চলাকালীন সময়ে চুপ থাকাও ওয়াজিব। খুতবার চলার সময় কেউ যদি কথাবার্তা বলে তবে তাকে ‘আপনি চুপ করুন’ পাশের কোনো ব্যক্তির এ কথা বলাও নিষেধ বলে হাদিসে প্রমাণিত।অতত্রব বলা যায়, জুমআর দিন ইমামের খুতবা চলাকালীন সময়ে খুতবা শোনা এবং চুপ থাকা ছাড়া সব ধরনের কথাবার্তা, কাজকর্ম এমনকি নামাজ, জিকির, কুরআন তেলাওয়াতও নিষিদ্ধ। কেননা জুমআর খুতবায় কুরআন থেকে কথা বলা হয়। কুরআনের দারস দেয়া হয়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন-‘যখন কুরআন পড়া হয় (কুরআনের দারস দেয়া হয়) তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত নাজিল হয়।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২০৪)প্রিয় নবি হযরত মোহাম্মদ (সা:) জুমআর খতুবার দিনের করণীয় সম্পর্কে অনেক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ফজিলত বর্ণনা করেছেন। হাদিসে এসেছে-হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করল অতপর জুমআয় এসে চুপ করে মনোযোগ সহকারে (খুতবা) শুনল, তার পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে। আর যে (এ সময়) কঙ্কর স্পর্শ করল সে অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিম)- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ, জুমআর দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে ‘চুপ থাক’ বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন; তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি) অর্থাৎ পাশের কেউ কথা বললে তাকে চুপ করার কথাও বলা সমীচিন নয়।ফাতহুল বারীতে এসেছে, ইমাম ইবনে ওয়াহাব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘এর অর্থ হল, তার জুমআর ফরজ আদায় হলেও সে জুমআর ফজিলত থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল।’ (নাউজুবিল্লাহ)অতঃপর বলা যায়, জুমআর দিন ইমামের খুতবা চলাকালীন সময়ে দানবাক্স চালিয়ে দেয়া বা চুপচাপ কেউ কেউ মসজিদের জন্য টাকা উঠানো নাজায়েজ তথা নিষেধ। এ সময় দানবাক্স চালিয়ে দেয়া বা টাকা উঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে এবং পুরোপুরি মনোযোগের সঙ্গে ইমামের আলোচনা শোনার মাধ্যমে ওয়াজিব আদায় করতে হবে। কেননা কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী ইমামের খুতবা শোনা ওয়াজিব বা আবশ্যক। আর খুতবার সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি রহমত নাজিল করেন।মসজিদের প্রয়োজনে খুতবার আগে ও পরে দানবাক্স ছেড়ে দেয়া যাবে এবং টাকাও উঠানো যাবে।