নালিতাবাড়ী উপজেলায় সীমান্তবর্তী খর-খরস্ত্রোতা ভোগাই এবং চেল্লখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বেশ কয়েকদিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাসুদ রানা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুর রহমান। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা বৈধভাবে বালু উত্তোলনের দাবিতে মানববন্ধন করতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন শান্তি বজায় রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেন।
সূত্র জানায়, নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী উপজেলায় খর-খরস্ত্রোতা ভোগাই এবং চেল্লখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে এবং পাশের বসতবাড়ি ভিটা, আবাদি জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলন করছে। অবৈধ বাল উত্তোলন বন্ধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে এদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধ ভালো উত্তোলনের অভিযান বন্ধ করতে মানববন্ধন এবং বৃক্ষর বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন।
যার ফলে শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে উপজেলা প্রশাসন শান্তি বজায় রাখতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি বন্ধ করতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। ১৪৪ ধারা বলা হয়েছে উপজেলা সকল মানববন্ধন বিক্ষোভ কর্মসূচির সভা সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ১৪৪ ধারা আওতার বাহিরে থাকবে সকল প্রকার যানবাহন এবং প্রতিদিনের মতোই চলবে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম।
অপরদিকে, গত ৪ আগস্ট শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র হত্যা মামলার আসামীদের নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভা করার প্রতিবাদে ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করে বিএনপি। এ কর্মসূচীর ফলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। ফলে বিক্ষোভ কর্মসূচী বাতিল হয়ে গেছে বিএনপি’র।
এদিকে সম্প্রতি ওইসব মামলার এজাহারভুক্ত অনেকে প্রকাশ্যে এলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আরও ক্ষুব্ধ হন। এমতাবস্থায় শেরপুর জেলা বিএনপি’র সহসভাপতি ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক নুরুল আমীনের নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রোববার শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচী আহবান করেন। এমতাবস্থায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন রোববার শহরে দিনব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করে। বর্তমানে শহরে সেনা টহল রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির পর বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ কর্মসূচী বাতিল করেছে।
জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি নুরুল আমীন জানান, সমন্বয় সভায় কি করে হত্যা মামলার আসামীরা উপস্থিত থাকেন? কেন এখনো পর্যন্ত ওইসব চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা হয়নি। এসব দাবীতে আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচী ছিল। ১৪৪ ধারা জারি করায় তা বাতিল করা হয়েছে। এসময় তিনি পুলিশের প্রতি অভিযোগ তুলে আরও বলেন, সম্প্রতি হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারপরও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান,অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধ ভালো উত্তোলনের অভিযান বন্ধ করতে যে মানববন্ধন এবং বৃক্ষর বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন এর ফলে নালিতাবাড়ী একটি অশান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হতো যার ফলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এবং সমন্বয় সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা এ কমিটির সদস্য। তারা আদৌ মামলার আসামী কি না বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তদুপরি তাদের গ্রেফতারের এখতিয়ার পুলিশের। তারা যদি মামলার আসামী হয়ে থাকেন তবে মামলার কপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।