পবিত্র কোরআনে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। মুসলমানদের জীবন বিধান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। এতে কোনোরূপ যোগ-বিয়োগ করার সুযোগ নেই। এমনকি ইসলামে কুসংস্কারেরও কোনো স্থান নেই।মানুষের তৈরি আমাদের সমাজে কিছু প্রচলিত কুসংস্কার রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ফেতনা ও মিথ্যাচার ছড়ায়। যেমন, কোথাও রওনা দিলে ঝাড়ু, খালি কলসি বা কেউ হাঁচি দিতে দেখলে অমঙ্গল হয়! আসলে ইসলামে এ ধরনের কুসংস্কারের কোনো ভিত্তি নেই।মানুষের মাঝে প্রচলিত ভুল ধারণা, জোড়া কলা খাওয়া নিয়ে নানা কুসংস্কার আলোচনা করবো। আল্লাহর হুকুম ছাড়া, শুধু জোড়া কলা কেন কোনো খাবারেরই জোড়া সন্তান জন্মানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার কোনো ক্ষমতা নেই। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন,لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاء يَهَبُ لِمَنْ يَشَاء إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاء الذُّكُورَ – أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَن يَشَاء عَقِيمًا إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ অর্থ: নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’য়ালারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। অথবা তাদের দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যাত্ব করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল। (সুরা শুরা ৪৯,৫০) সুতরাং মহান আল্লাহর পবিত্র কালামে পাকের এই দুটি আয়াত থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, সবকিছুর ক্ষমতা এক মাত্র মহান আল্লাহর হাতে। তিনি চাইলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। অনেকেই আছেন, যারা জীবনে কখনোই জোড়া কলা খাননি, কিন্তু আল্লাহ তাদের জোড়া সন্তান দিয়েছেন, আসলে এ ধরনের কথাগুলোর ইসলামে কোনো প্রকার ভিত্তি নেই। তাই এমনসব আলোচনা থেকে নিজে দূরে থাকুন। অপরকেও সচেতন করুণ। আমাদের সমাজের এমন একটি কুসংষ্কারের প্রচলন রয়েছে যে, জোড়া কলা খাওয়ার কারণে জোড়া সন্তান জন্ম হবে। অনেক শিক্ষিত বর্বর এই কুসংস্কারের কারণে শুধু গর্ভকালীন সময়ই নয়, যেকোনো সময়েই জোড়া কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এমনো দেখা গেছে অনেক তরুণ তরুণী, বিয়ে করেননি তারাও এই কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তারা মনে করেন, জোড় কলা খাওয়ার কারণে বিয়ের পর তাদের ঘরে জোড় সন্তান জন্ম নেবে। অথচ ইসলাম এমন কোনো ধারণাকে কখনোই সমর্থন করে না।আদিম কালে এমন কিছু বর্বর প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত ছিল। ঠিক আজো সেই প্রাচীনকালের কুসংষ্কার ধারণাগুলোকে আঁকড়ে ধরে আছেন কিছু মানুষ। বিশেষ করে দেখা যায় পরিবারের প্রবীণ লোকদের কাছে এসব কুসংস্কারের কথা শোনা যায়। তাদের কাছেই এই প্রথার মূল্য বেশি। গর্ভবতী অবস্থায় মায়েরা কী খেতে পারবেন আর কী খেতে পারবেন না এ নিয়েও রয়েছে আমাদের সমাজে নানা কুসংস্কার প্রচলিত আছে। যেমন, জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান জন্ম নেয়। আসলে এ কথাটি নিতান্তই হাস্যকর ও আদিম যুগের মূর্খ বর্বর মানুষের ধারণা মাত্র। এর পেছনে না আছে কোনো ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা, না আছে কোনো যুক্তি। ইসলাম কারো মুখের কথায় চলে না। চলতে পারে না। তাই এমন বিশ্বাস অবশ্যই বর্জন করা উচিত এবং ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা উচিত।নবী করীম (সা:) বলছেন,ইসলামে অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়। (বুখারি শরিফ)