সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে জাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে গত ২৩ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।’
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় জাবি ছাত্রলীগের প্রায় তিন শ নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে গত ২৩ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।
‘আমরা মনে করি, তিনি তার জুলুম, নিপীড়ন, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দায়িত্বের অবহেলা করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় না করে তিনি যে হল কমিটি গঠন করেছেন, সেখানে আমরা দেখেছি, ত্যাগীদের বঞ্চিত করে বিবাহিত, অছাত্র, বহিষ্কৃত এবং ক্যাম্পাসে যাদের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, তাদের দ্বারা তড়িঘড়ি করে হল কমিটি গঠন করেছেন।
‘আমরা মনে করি, ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে তিনি এই কমিটি গঠন করেছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে তার পদত্যাগ দাবি করছি।’
এদিকে, গত ২৩ জানুয়ারি সংগঠনের কর্মীদের খোঁজখবর না রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জমি দখল, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, কর্মীসভা করেও দীর্ঘদিন ধরে হল কমিটি না দেয়া, নিজ হলকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা, নেতা-কর্মীরা দেখা করতে চাইলে ব্যস্ততার অজুহাত দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের ছয়টি হলের নেতা-কর্মীরা। পরে গত ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং তদন্ত কমিটির সদস্য রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা দ্রুত রিপোর্ট দেব।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আকতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি এবং ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের ১ বছর মেয়াদী আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নিয়ম থাকলেও ১১ মাস পর ৩৯০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। গত বছরের ৩ জানুয়ারি এই কমিটির মেয়াদ ফুরালেও নতুন কমিটি হয়নি। বর্তমানে কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ প্রায় ১৫০ জনেরই ছাত্রত্ব নেই বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।