১৪ তম গ্রেড আমাদের দাবি নয়,এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার এই শ্লোগান কে সামনে রেখে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (কলেজ) এমপিওভুক্ত ল্যাব সহকারীদের একাংশ গ্রেড বৈষম্য দূরীকরণ এবং যৌক্তিক কর্ম নীতিমালা প্রনয়ণসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তারা প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি পরিতোষ রায় বলেন,সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুসারে এমপিওভুক্ত কলেজের ল্যাব সহকারীদের বেতন গ্রেড ১৮তম হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ল্যাবরেটরি সহকারীদের বেতন গ্রেড যথাক্রমে ১০ম, ১১তম, ১৪তম এবং বিভিন্ন অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের ল্যাব সহকারীদের সর্বনিম্ন বেতন গ্রেড ১৬তম যা চরম বৈষম্য।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ কারী বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ল্যাব সহকারীদের ৩য় শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা সত্ত্বেও সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এখনও সংশোধন করে গ্রেড নির্ধারণ করা হয়নি। এতে করে ল্যাব সহকারীরা চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। আবার অন্যদিকে আমাদের সঠিক কর্ম নীতিমালা না থাকার কারণে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব বহির্ভূত অনেক কাজ করানো হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে গ্রেড বৈষম্য দূর করে কর্ম নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ল্যাব সহকারীদের তুলে ধরা পাঁচ দফা দাবি হলো- বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের ন্যূনতম বেতন গ্রেড-১৪ প্রদান করতে হবে; বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এইচএসসি পাস করতে হবে; ল্যাব সহকারীদের জন্য প্রযোজ্য সম্মান জনক কর্ম নীতিমালা প্রদান করতে হবে; আমরা যে একাডেমিক তা কর্ম নীতিমালায় উল্লেখ করতে হবে এবং ইতোপূর্বে নিয়োগ প্রাপ্ত সকল ল্যাব সহকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমপর্যায়ের গ্রেড প্রদান করতে হবে।
মানববন্ধনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ সজিব মিয়া বলেন,গত ৫ আগস্ট বৈষম্যের কলঙ্ক মাথায় নিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলে দেশের বিভিন্ন দপ্তর সংস্কার হয় এবং বৈষম্য জিরো টলারেন্সে নেমে আসে কিন্তু আমাদের বেলায় কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না, যাহা বৈষম্য বিরোধী বাংলাদেশে অকল্পনীয়। আমরা এই বৈষম্যের সুষ্ঠু সমাধান চাই।
বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপিতে তারা উল্লেখ্য করেন, “বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নিয়ন্ত্রনাধীন বেসরকারি এমপিওভূক্ত কলেজের ১৮তম গ্রেড ভূক্ত ল্যাব সহকারী (পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, আইসিটি) বিষয়ে কর্মরত আছি। প্রথমেই আমরা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের জন্য যেসব ছাত্র- জনতা জীবন দিয়ে দেশকে বৈষম্য মুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যাদের উদ্দেশ্যই ছিল বৈষম্য মুক্ত একটি রাষ্ট্র গঠন করা কিন্তু দুঃখের বিষয় এমপিও ভুক্ত (কলেজ) ল্যাব সহকারীরা এখনও চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুসারে এমপিওভুক্ত কলেজের ল্যাব সহকারীদের বেতন গ্রেড ১৮তম হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ল্যাবরেটরি সহকারীদের বেতন গ্রেড যথাক্রমে ১০ম, ১১তম, ১৪তম এবং বিভিন্ন অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের ল্যাব সহকারীদের সর্বনিম্ন বেতন গ্রেড ১৬তম যা চরম বৈষম্য লক্ষনীয়। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত সর্বশেষ পরিপত্র যাহার স্মারক নং-৩৭,০০,০০০০,০৭৪,০০২.০০২.২০১৬.১০৬, তারিখ- ১০/০১/২০২৪ খ্রিঃ অনুযায়ী ল্যাব সহকারীদের ৩য় শ্রেণিতে অর্ন্তভূক্ত করা সত্ত্বেও সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এখনও সংশোধন করে গ্রেড নির্ধারন করা হয়নি। এতে করে ল্যাব সহকারীরা চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। আবার অন্যদিকে আমাদের সঠিক কর্ম নীতিমালা না থাকার কারনে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব বহির্ভূত অনেক কাজ করানো হচ্ছে। এতে করে ল্যাবের কাজে ব্যঘাত ঘটছে।
অতএব মহোদয়ের সমীপে আকুল আবেদন এই যে, আমাদের এই বৈষম্য দূর করে যথাযথ বিবেচনা করে নিচে বর্ণিত দাবি সমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য আপনার নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
আমাদের দাবি সমূহঃ
১। বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের নূন্যতম বেতন গ্রেড-১৪ প্রদান করা।
২। বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম এইচ,এস,সি পাস করা।
৩। ল্যাব সহকারীদের জন্য প্রযোজ্য সম্মান জনক কর্ম নীতিমালা প্রদান ।
৪। আমরা যে একাডেমিক তা কর্ম নীতিমালায় উল্লেখ করা।
৫। ইতোপূর্বে নিয়োগ প্রাপ্ত সকল ল্যাব সহকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমপর্যায়ের গ্রেড প্রদান করা।”