ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর এখনও সেভাবে জমে ওঠেনি। বৈরী আবহাওয়াসহ নানা কারণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি অনেকটা কম হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে শুক্রবার ছুটির দিন থেকে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ী ও আয়োজকরা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে মেলা প্রাঙ্গণে তেমন লোকসমাগম ছিল না। তবে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। তবে মেলার স্টল মালিকরা বলছেন, বিগত আসরের তুলনায় এবার ক্রেতা-দর্শনার্থী কম হয়েছে।
ক্রেতা সমাগম কম হয়েছে উল্লেখ করে ড্রেস লাইন বাংলাদেশ স্টলের মালিক ও বিক্রেতা রুবেল হোসেন বলেন, ‘গত আসরের তুলনায় মেলায় এবার ক্রেতা অনেক কম হয়েছে। এখনও মেলার আরও অনেক দিক বাকি আছে। আশা করছি, শুক্রবার থেকে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে।’
ক্রেতার তুলনায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি উল্লেখ করে কসমেটিকস স্টলের মালিক বাবু আহমেদ বলেন, ‘বিকাল থেকে লোকসমাগম বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। অনেকে মেলা ঘুরে দেখতে এসেছেন। আবার অনেকে দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। এ ছাড়া মেলার শুরুতে শীতের তীব্রতা থাকার ফলে লোকসমাগম কম হয়েছে।’
সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া এলাকা থেকে বন্ধুদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আরাফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে বন্ধুদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। তবে মেলা এখনও সেভাবে জমে ওঠেনি। অনেক স্টলের কাজ সম্পন্ন হয়নি। মেলা জমে উঠতে আরও সময় লাগবে।’
তবে মেলায় খাবারের দোকান ও শিশুদের জন্য মিনি পার্কের স্থানে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। সেখানে মিনি পার্কে বিভিন্ন রাইডে শিশুসহ পরিবার সদস্যদের ভিড় দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ ২
জুতার দোকানে ক্রেতাদের ভিড়
দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে রিনা বেগম এসেছেন বাণিজ্য মেলার মিনি পার্কে। তিনি বলেন, ‘দুই ছেলে বায়না ধরেছে রাইডে চড়বে। তাই মিনি পার্কে এসেছি। ঘোড়ার চরকিতে চড়েছে। এখন দেখি আর কোন কোন রাইডে যেতে চায়।’
দর্শনার্থী ও স্টল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘মেলার প্রথম দিকে তীব্র শীত ছিল। এ ছাড়া অনেক স্টল নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ অসম্পূর্ণ ছিল। মেলার দিন যত গড়াচ্ছে এই সমস্যা তত কমে আসছে। ফলে ছুটির দিন শুক্রবার থেকে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীরা।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারের আসরে স্টলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫১টি। যা বিগত বছরে ছিল ৩৩১টি। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা মেলায় নিজেদের পণ্য বিক্রি করছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় প্রবেশমূল্যও বেড়েছে। এ বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা।
খুব শিগগিরই মেলা জমে উঠবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তারা বলছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে মেলা শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে। সেই সঙ্গে মেলায় স্টল নির্মাণকাজও বিলম্ব হয়েছে। তবে ছুটির দিনগুলোতে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে।’
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকারকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
মেলায় গেট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেলায় গত আসরের তুলনায় লোকসমাগম বেশি হয়নি। তবে ছুটির দিনে লোকসমাগম বেশি হয়। আশা করছি, আগামীকাল ছুটির দিনে লোক সমাগম গত শুক্রবারের তুলনায় বেশি হবে।