চুরি চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৭.৩০ মিনিটে শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা (উঃ) পাড়া গ্রামে, মাইঝপাতি এলাকায় মোঃ দ্বীন ইসলাম বাবু (১৫), ও মোঃ আশরাফুল ইসলাম (১৪) নামের দুই কিশোরকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর জখম করেছে নোবেল বাহিনী। একই সময়ে আসামি ভিকটিমের চাচা মোঃ মনির মিয়াকে (৩৫) কিল ঘুষি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এই বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন (৫৭), পিতা- মৃত লুৎফর রহমান বাদী হয়ে নকলা থানার একটি মামলা দায়ের করেন ,অভিযুক্ত আসামিরা হলেন ১.মোঃ নোবেল মিয়া (২৮), পিতা- মৃত জিন্নাত আলী, ২. মোঃ তোফায়েল হোসেন ঝাড়ু (৩৬), পিতা- মৃত হাইতুল্লাহ, ৩. মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান মনির (৩৮), পিতা- মোঃ নুর ইসলাম, ৪. মোঃ রবিউল ওরুফে কালু (২৬), পিতা- মোঃ আঃ রাজ্জাক, ৫. মোঃ কালু মিয়া (২৫), পিতা- মৃত বিসা শেখ, সকল আসামি সাং- বাছুর আলগা (উঃ) পাড়া, নকলা, শেরপুর। আরো অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের চাচা মোঃ মনির মিয়া বাছুর আলগা (উঃ) গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন (পুলিশের) কৃষি প্রজেক্টে কাজ করেন, জীবন পুলিশের সাথে নোবেলের পূর্ব সূত্রতা থাকায় মোঃ মনির মিয়াকে কাজ করতে নিষেধ করেন কিন্তু মনির মিয়া তার নিষেধ অমান্য করিয়া কাজ করিতে থাকিলে তার উপর আক্রোশ জমে, এর ফলে গত রাত ৭.৩০ মিনিটে ভিকটিমদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন নোবেল বাহিনী এবং এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। পরে ভিকটিমদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমদের জখম গুরুত্বর দেখে তাৎক্ষনাত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
এই বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন (পুলিশ) বলেন, নোবেল বাহিনী বাছুর আলগা (উঃ) গ্রামে আগে থেকেই তৎপর, এর আগেও অনেক অপকর্ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে, কিন্তু অদৃশ্য শক্তি বলে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকে। তাদের অত্যাচার পুরো গ্রাম অতিষ্ঠ।
ভিকটিমের পিতা মোঃ খাইরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে মোঃ দ্বীন ইসলাম ও বাতিজা আশরাফুল ইসলাম ছোট মানুষ চন্দ্রকোনা রাজলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়ে, রাতের খাবার দিয়ে আসতে সন্ধ্যার সময় তারা দুজন আমার ছোট ভাইয়ের কাছে (মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জীবনের কৃষি খামারে) যায়, খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় পথিমধ্যে নোবেল বাহিনী তাদের উপর অতর্কিত হামলা করেছে, আমার ছেলের অবস্থা খুব খারাপ, ছুরিকাঘাতে পেটের ভুরি বাহির হয়ে গেছে এবং ভাতিজার একই অবস্থা, এখন বাঁচবে কিনা আল্লাহ জানে।
তিনি আরো বলেন এই নোবেল বাহিনী এর আগেও এলাকার এক ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো, পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা গ্রাম শালিসের মাধ্যমে মিটমাট করে দেয়। বেশ কিছুদিন শান্ত থাকার পর এই নোবেল বাহিনী আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং এলাকার লোকজনের প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাদের অত্যাচার স্থানীয় লোকজন ঠিক ঠাক মতো কৃষি চাষ করতে পারছে না, জমি থেকে মটর চুরি,ধান চুরি, কৃষি জমি বিনষ্ট করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এই সকল বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিতের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান গেন্দুকে বার বার ফোন দিয়ে যোগাযোগ চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, পাঁচ জনকে আসামি করে নকলা থানার একটি ধারাবাহিক মামলা হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।