আধিপত্য ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে কক্সবাজারে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন পেকুয়া উপজেলা সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শওকত। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় নিহত শ্রমিকদল নেতা শহিদুল ইসলাম শওকত (৪০) পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা এলাকার শফিউল আলমের ছেলে।এই ঘটনায় তার ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৭) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২৩) গুরুতর আহত হন। আহতদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র থেকে জানা যায়, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর পক্ষটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সহ-সভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম। এই দুটি পক্ষ পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী।
এ বিষয়ে শ্রমিকদলের একাধিক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিকদলের দুই পক্ষই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এর জের ও দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদলের নেতারা আরও বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গত রোববার রাতে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ পর্যন্ত গড়ায়। তিনি সোমবার সকাল ১০টার দিকে দুই পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিরোধ মীমাংসা করে দেন এবং বিশৃঙ্খলা করলে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।
এক পর্যায়ে রাত আটটার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তার ভাই শাকের। এই ঘটনার জের ধরে সাজ্জাদুল ইসলামের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে শওকত, সাকের ও তারেকের ওপর আক্রমণ করে। এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।
আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনেরা উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শওকতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে শওকত মারা যান।নিহত শওকতের স্বজনরা জানিয়েছেন, মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ সেখান থেকে পেকুয়া নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পৃক্ত না। আমার সঙ্গে যে ওসমানের বিরোধের কথা বলা হচ্ছে, সেই ওসমানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। হামলার কথা শুনে আমি আর ওসমান দুজনে একসঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছি।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শোনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। কারা খুন করেছে, কী কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে সবই আমরা সংগ্রহ করছি। মরদেহ চমেক হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
